হানিফ আকন্দ,ত্রিশাল প্রতিনিধি::জীবন বৈচিত্র্যময়। প্রতিটি অভিভাবক নিজ সন্তানকে সুশিক্ষিত ও সুখী দেখতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে লেখাপড়া না করিয়ে সেই ছোট্ট শিশুকে নিয়ে একসঙ্গে ইটের ভাটায় কাজে নেমেছেন অভিভাবক।
অথচ বায়ূ দূষণের বড় একটি কারণ হচ্ছে এই ইটের ভাটা। সুযোগ না থাকায় বাধ্য হয়ে এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাটছে শিশুদের শৈশব। দেশে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকলেও বাঁচার তাগিদে তাদের কিছু যেন করার নেই।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি ইটভাটায় দেখা যায়, অভিভাবক-সন্তান একসঙ্গে কাজ করছেন ইট ভাটায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মা কাজ করছেন ইটভাটায়। তিনি যে ইটের গাড়ি বহন করেন সেখানে সহযোগিতা করছে তার ছোট ছেলে। ইটভাটার ভেতরে সন্তানকে পাশে বসিয়ে রেখে কাজ করছেন আরেক মা।
সেখানে কথা হয় অভিভাবকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে গত ৬ মাস ধরে কাজ করছি। যেহেতু এখানে অস্থায়ী, তাই কারও কাছে সন্তানকে রেখে আসার মতো জায়গা নেই। বাধ্য হয়েই এখানে পাশে বসিয়ে রেখে কাজ করতে হয়।
আরেক অভিভাবক বলেন, খুব কষ্টের সংসার। তাই এখানে আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তান একসঙ্গে কাজ করি। এতে করে কোনো মতে সংসারটা চলে যায়। একার পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব হয় না।
শিশু শ্রমিকদের একজন বলেন, এখানে আমি রোদে শুকাতে দেওয়া ইট উল্টে দেওয়ার কাজ করি। এই কাজে ২-৩শ টাকা পাই। বাবা-মা পড়ালেখার খরচ চালাতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে তাদের সঙ্গে কাজে আসি।
জানা যায়, ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি বাস্তবায়নের জন্য ২০১২ সালে গৃহীত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১২-২০১৬), যেখানে ২০১৬ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনের বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়েছে। সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ না হলেও এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮টি পেশাকে। আর ২০২১ সালের মধ্যে এসব পেশার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।