বাংলাদেশের সেই দুঃসহ স্মৃতি!


‘অধিনায়ক হিসেবে ওই রাত কাটানো ছিল আমার জন্য সবথেকে কঠিন। পুরো দল হোটেলে ফিরে লবিতে বসে আছে। কেউ কাউকে ছেড়ে যাচ্ছিল না। পুরো দল একসঙ্গে। হতভম্ব। কোনো কিছু বুঝার আগে ম্যাচটা আমরা হেরে গিয়েছিলাম। কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না। প্রত্যেককে সান্তনা দেওয়া আমার জন্য কঠিন ছিল। অধিনায়ক হিসেবে ওই সময়টা ছিল আমার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।’
এক সাক্ষাৎকারে বেঙ্গালুরুর দুঃসহ স্মৃতি মনে করে কথাগুলো বলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। পাক্কা চার বছর আগে আজকের দিনেই বেঙ্গালুরুতে ঘটেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বেদনাবিধুর দিন! কি ঘটেছিল? চলুন ফ্ল্যাশব্যাক করি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশ-ভারত। ১৮ বছর পর ভারতের বিপক্ষে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বাংলাদেদেশের। ২০১৬ সালের আগে ১৯৯৮ সালের ২৫ মে খেলেছিল দুই দল। প্রতিবেশি দুই দেশের লড়াইয়ে ছড়িয়েছিল উত্তেজনা, রোমাঞ্চ।
প্রথম অর্ধে ভারতের উৎসব মাটি করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও ধোনিদের থামিয়ে দেয় মাত্র ১৪৬ রানে। মন্থর শুরুর পর ইনিংসের মধ্যভাগে গিয়ার শিফট করে জয়ের বন্দরের কাছাকাছি চলে যায় বাংলাদেশ। শেষ ৬ বলে দরকার মাত্র ১১ রান। ক্রিজে তখন দুই ‘ভায়রা’;মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। বল হাতে হার্দিক পান্ডিয়া।
প্রথম বলে মাহমুদউল্লাহ ১ রান নিয়ে প্রান্ত বদল করলেন। পরের বলে মুশফিক কাভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকালেন। ব্যবধান নেমে আসল ৪ বলে ৬। পরের বলে স্কুপ করে আরেকটি বাউন্ডার। ধোনি ড্রাইভ দিয়েছিলেন। কিন্তু নাগালে পাননি। জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে বাংলাদেশ। কিন্তু জয় নিশ্চিতের আগেই মাঠে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর উদযাপন শুরু হয়ে যায়।সেখানেই ম্যাচ হেরে বসে বাংলাদেশ! পরের দুই বলে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ আউট। শেষ বলে রান আউট মুস্তাফিজ। ১ রানে হার বাংলাদেশের!
ভারতের স্টেডিয়ামে খেলা দেখার একটা আমেজ আছে। আপনি যদি খেলায় মনোযোগী নাও হন, তাহলে সমস্যা নেই। গ্যালারির উন্মাদনা দেখে বুঝে যাবেন মাঠে কী চলছে! স্বাগতিকদের যখন দাপট চলে তখন গ্যালারিতে গগণবিদারী চিৎকার। আর সফরকারী দলের বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি আর বোলিংয়ে উইকেট মানে পিনপতন নীরবতা। শেষ ৩ বল বাদ বেঙ্গালুরু স্টেডিয়াম ছিল মিয়ম্রাণ। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর গ্যালারি উন্মাতাল।
ম্যাচ হারলেও বাংলাদেশ হৃদয় জিতেছিল। অবশ্য এমন হৃদয় এর আগে-পরে একাধিকবার জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনাল, ২০১৮ নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল তো বাংলাদেশ নিজেদের হাত থেকে ফসকে দেয়।
বেঙ্গালুরুর হারের দায়মোচন করেছেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। গত বছরের নভেম্বরে দিল্লিতে দ্বিপাক্ষিক সফরে ভারতকে টি-টোয়েন্টি হারায় বাংলাদেশ। তিন বছর পর আবার মুশফিক একই উল্লাস করেছেন। শূণ্যে ঘুষি ছুঁড়েছেন, প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙানি দিয়েছেন। তাতে বেঙ্গালুরুর দুঃস্মৃতি মুছে ভারতের মাটিতে প্রথম বিজয়ের চিত্র আঁকে বাংলাদেশ।
Related News
‘সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে’ এক মাস, কেমন আছেন ক্রিকেটাররা?
ডেস্ক রিপোর্ট: সারাবিশ্ব বিভেদ ভুলে গাইছে ঐক্যের জয়গান। তবুও পারছে না কুলিয়ে উঠতে। করোনাভাইরাসে প্রতিদিনRead More
মিরপুর স্টেডিয়ামে অস্থায়ী হাসপাতাল করতে আপত্তি নেই বিসিবির
ক্রীড়া প্রতিবেদক | করোনা আক্রান্তদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এজন্য নির্ধারিত হাসপাতালেরRead More