হানিফ আকন্দ,ত্রিশাল প্রতিনিধি::সারাদেশ ব্যাপী প্রখর রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। পাশাপাশি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায়ও তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। রোদে পুড়ছে প্রকৃতি, বইছে তাপ প্রবাহ, স্বস্তি নেই কোথাও। জনজীবনে কাহিল অবস্থা। তীব্র গরমে রাস্তার পিচ গলে যাওয়ায় চলাচল হয়ে পড়ছে কষ্টসাধ্য।
দুপুরের রোদে খোলা আকাশের নিচে হাঁটলে গরম বাতাসে মুখমন্ডল পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সূর্য এতটাই প্রখর যে,বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুন্ড। একটু প্রশান্তি ও শরীরকে সতেজ রাখার জন্য মানুষ ছুটছেন। গাছের ছায়া, কিংবা পুকুর পাড়। এছাড়াও গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুরা পুকুর কিংবা নদীর পানিতে পার করছে সময়। শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতেও গরমে মানুষ | ঘুমাতে পারছে না কারণ প্রচুর লোডশেডিং আর বৈদ্যুতিক পাখাও হার মানছে এই তিব্র গরমের কাছে।
সরেজমিনে ত্রিশাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ভ্যাপসা গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী ও বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা আর এই তীব্র রোদে মানুষের মুখে দেখাচ্ছে মলিনতার ছাপ।গাছের ছায়া আর পুকুর পাড়ে বসে থাকা কয়েকজন দিনমজুরী বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে কাজে মন বসছে না আর দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না, তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছি।কৃষক আব্দুল করিম বলেন, তীব্র গরমের মাঝে ফসল কাটতে যেয়ে অবস্থা একেবারে নাজেহাল। বার বার ঠান্ডা পানি আর লেবুর শরবত পান করলেও স্বস্তি মিলছে না।এই অতিরিক্ত গরমে ত্রিশালের মানুষের জনজীবন যেন গৃহবন্ধী হয়ে পড়েছে ফলে দেখা দিচ্ছে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রাদুর্ভাব। এ বিষয়ে একাধিক ডাক্তার সহ এলাকার বয়স্ক বেশ কয়েকজন ব্যক্তিরা জানান, বিগত কয়েকদিনে গরমের কারণে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
এদিকে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয়। ফুটপাতে প্রচুর পরিমানে বিক্রি হচ্ছে আখের রস, ডাব ও বিভিন্ন ফলমূলের সাথে লেবুর শরবত।
রিক্সা চালক বলেন, প্রচন্ড গরম ও তাপমাত্রা বেশী হওয়ায় কাজে বের হয়েও যাত্রী কম পাই, ফলে আমাদের ইনকাম কম হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকা,ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা, বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আগামী কয়েকদিন এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়াও বায়ু মন্ডলে জলীয় বাষ্প বেশি ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় গরম এতো বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।প্রখর গরম ও স্বাস্থ্য বিষয়ে একাধিক চিকিৎসক জানান, গ্রীষ্মের দাবদাহ বা অতিরিক্ত গরম আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই অতিরিক্ত গরমে আমাদের দেহে বা শরীরে যেসমস্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই হতে পারে আমাদের মৃত্যুর কারন।